অনলাইনে সহজে ট্রেনের টিকেট কাটার উপায় জেনে নিন।

বর্তমান সময়ে, প্রযুক্তির বিকাশ আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। একসময় ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য আমাদের স্টেশনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হত। তবে আজকের দিনে, অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটা সেই ঝামেলার একটি চমৎকার সমাধান। আপনি ঘরে বসে বা অফিস থেকে, মাত্র কয়েক মিনিটেই ট্রেনের টিকেট কাটতে পারেন।

অনলাইনে-সহজে-ট্রেনের-টিকেট-কাটার-উপায়-জেনে-নিন

পোস্টসূচিপত্রঃঅনলাইনে সহজে ট্রেনের টিকেট কাটার উপায় জেনে নিন। 

ভূমিকা

এতে যেমন সময় বাঁচে, তেমনি স্টেশনের কোলাহল আর অপেক্ষার যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেই এখনও অনলাইনে টিকেট কাটার প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি বুঝতে পারেন না, ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।এই পোস্টে আমরা আপনাকে দেখাব কিভাবে সহজে, নিরাপদে এবং দ্রুত অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটবেন।

এই প্রক্রিয়াটি এতই সোজা যে একবার বুঝে গেলে, আপনি প্রতিবারই সহজেই অনলাইনে টিকেট কাটতে পারবেন। শুধু তাই নয়, আপনার টিকেট কাটা অভিজ্ঞতাকে আরো সুবিধাজনক করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস এবং ট্রিকসও শেয়ার করব।

কেন অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটবেন?

অনলাইন ট্রেন টিকেটিং ব্যবস্থা প্রচলিত হওয়ার ফলে টিকেট কাটা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ এবং ঝামেলা মুক্ত। এর মাধ্যমে আপনি দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো ছাড়াই আপনার পছন্দের তারিখ ও সময়ের ট্রেন টিকেট কাটতে পারবেন। এতে সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি টিকেট পেতে কোনো ঝামেলা হবে না। নিচে অনলাইনে টিকেট কাটার কিছু সুবিধা তুলে ধরা হলো:

১. সময় সাশ্রয়ী: লাইনে দাঁড়ানোর দরকার নেই, ঘরে বসেই টিকেট কাটতে পারবেন।

২. সহজলভ্যতা: ২৪/৭ সময়ে টিকেট কাটার সুবিধা পাওয়া যায়।

৩. টিকেট রিজার্ভেশন নিশ্চিত: আগে থেকেই টিকেট রিজার্ভ করতে পারবেন, যেটি সাধারণ কাউন্টারে গিয়ে কাটার সময় অনেক সময় পেতে সমস্যা হয়।

৪. সেবা সহজ: স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ যেটি দিয়ে ইচ্ছা, অনলাইন থেকে সহজেই টিকেট কাটা যায়।

ধাপে ধাপে জেনে নিন কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটতে হয়।

অনলাইনে-সহজে-ট্রেনের-টিকেট-কাটার-উপায়-জেনে-নিন

ধাপ ১: 
  • অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য প্রস্তুতি
  • অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার আগে কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। যেমন:
  • আপনার হাতে থাকতে হবে একটি ইন্টারনেট সংযোগযুক্ত ডিভাইস (মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার)।
  • বিকাশ/নগদ/রকেট বা অন্য কোনো ডিজিটাল পেমেন্ট অপশন থাকতে হবে।
  • নিজের জন্য একটি রেজিস্টার্ড অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে সঠিক তথ্য দিয়ে।
  • এখন আপনি প্রস্তুত, চলুন দেখে নিই টিকেট কাটার প্রক্রিয়া।

ধাপ ২: 

প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন টিকেটিং সাইটে (https://eticket.railway.gov.bd/) যেতে হবে। সেখানে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

১. অ্যাকাউন্ট খোলা:

  • ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে “Register” অপশনে ক্লিক করুন।
  • নাম, মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল ঠিকানা ইত্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করে ফর্মটি সাবমিট করুন।
  • আপনি একটি ভেরিফিকেশন মেসেজ বা ই-মেইল পাবেন, যা দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টটি ভেরিফাই করবেন।

৩. লগইন:

অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।

ধাপ ৩: গন্তব্য এবং তারিখ নির্বাচন

লগইন করার পরে, "Search Train" অপশনটি দেখতে পাবেন। এখানে আপনি গন্তব্য এবং তারিখ নির্বাচন করতে পারবেন।

১. গন্তব্য নির্বাচন:

আপনি কোথায় থেকে কোথায় যাবেন, সেই তথ্য পূরণ করুন। যেমন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম।

২. তারিখ এবং সময় নির্বাচন:

আপনি কোন তারিখে ভ্রমণ করবেন সেটি নির্বাচন করুন। এছাড়াও সময়ের ওপর ভিত্তি করে আপনি কোন ট্রেনে যাবেন, সেটি ঠিক করুন।

ধাপ ৪: ট্রেন নির্বাচন এবং আসন বুকিং

গন্তব্য এবং তারিখ নির্বাচন করার পর, আপনি কোন ট্রেনে যেতে চান, সেটি নির্বাচন করতে হবে। এখানে বিভিন্ন ট্রেনের সময়সূচি, আসনের ধরন এবং খালি আসন সম্পর্কিত তথ্য দেখতে পাবেন।

১. ট্রেন নির্বাচন:

তালিকা থেকে আপনার পছন্দের ট্রেনটি নির্বাচন করুন।

২. আসন নির্বাচন:

এরপর আপনি "Select Seat" অপশনে ক্লিক করে আপনার পছন্দের আসন নির্বাচন করবেন।

আসনগুলির ধরন অনুযায়ী মূল্য দেখতে পাবেন (শোভন, শোভন চেয়ার, এসি চেয়ার ইত্যাদি)।

ধাপ ৫: মূল্য পরিশোধ

টিকেট নিশ্চিত করার জন্য আপনার পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে।

১. পেমেন্ট মেথড নির্বাচন:

পেমেন্ট মেথড হিসেবে বিকাশ, নগদ, রকেট, এবং ব্যাংক কার্ড অপশন থেকে যেকোনোটি নির্বাচন করতে পারবেন।

২. পেমেন্ট প্রক্রিয়া:

পেমেন্ট সম্পন্ন করার জন্য সঠিক তথ্য প্রদান করুন এবং “Confirm” বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৬: টিকেট ডাউনলোড এবং প্রিন্ট

পেমেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন হলে, আপনি একটি ই-টিকেট পাবেন। এটি আপনার ই-মেইলেও চলে যাবে।

১. টিকেট ডাউনলোড:

ই-টিকেটটি আপনার ডিভাইসে ডাউনলোড করে রাখুন।

২. প্রিন্ট আউট:

ট্রেন ভ্রমণের সময় আপনি প্রিন্ট কপি নিয়ে যেতে পারেন, অথবা মোবাইলেই ই-টিকেট দেখাতে পারেন।

অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার সুবিধা ,সীমাবদ্ধতা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

অনলাইনে-সহজে-ট্রেনের-টিকেট-কাটার-উপায়-জেনে-নিন

১. পর্যাপ্ত সময় আগে টিকেট কাটুন: উৎসব বা ছুটির সময়ে টিকেট পাওয়া কঠিন হতে পারে, তাই পর্যাপ্ত সময় আগে টিকেট কাটুন।

২. টিকেট বাতিল: যদি আপনার যাত্রার পরিকল্পনা বাতিল হয়, আপনি অনলাইনে গিয়ে টিকেট বাতিল করতে পারবেন এবং টাকার আংশিক ফেরত পাবেন।

৩. ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখুন: আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে সতর্ক থাকুন এবং কারও সাথে শেয়ার করবেন না।

সুবিধা:

দ্রুত এবং সহজলভ্য।

বাড়িতে বসে টিকেট কাটা যায়।

অনলাইনে টিকেট বাতিল বা রিজার্ভেশনের সুবিধা।

সীমাবদ্ধতা: 

ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলে টিকেট কাটার সমস্যা হতে পারে।

কিছু সময় ওয়েবসাইটে লোডিং সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে ছুটির দিনে।

উপসংহার

অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ। বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেটিং ব্যবস্থা আমাদের জন্য অনেক সুবিধা এনেছে, যা সময় বাঁচায় এবং ভ্রমণকে করে তুলেছে আরও আরামদায়ক। সঠিকভাবে অনুসরণ করলে, আপনি সহজেই আপনার টিকেট কাটতে পারবেন এবং নির্ধারিত সময়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। আশা করছি এই পোস্টটি আপনার জন্য সহায়ক হবে। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, নিচে মন্তব্য করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Morning Li8 এ আপনার মূল্যবান কমেন্ট করুন। ইনশাআল্লাহ আমরা প্রত্যেকটি কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।

comment url