কিভাবে কফি খেয়ে ওজন কমাবো?

কফি হলো এমন একটি পানিয়,যা বর্তমানে একটি ট্রেন্ড হয়ে দাড়িয়েছে।খুব কম মানুষি রয়েছে যারা এ পানিয় পছন্দ করেনা,আবার কিছু কিছু মানুষ তো এমনো রয়েছে যারা কফিকে খুব বেশি মাত্রায় পান করে থাকে।কিন্তু প্রশ্ন হলো এই, যে কফি কি আমাদের শরীরের জন্য লাভজনক? কফি কি আমাদের ওজন কমাতে পারে? কফি পান করা কি উপকারি? যদি উপকারি হয়ে থাকে, তাহলে তার উপকারগুলো কি কি? আর যদি ক্ষতিকারক হয়ে থাকে, তাহলে তা কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে থাকে।তো চলুন এই বিষয়ে আলোচনা করা যাক।

পোস্টসূচীপত্রঃকিভাবে কফি খেয়ে ওজন কমাবো?প্রাচীনকালে মানুষদের মধ্যে চা এর ট্রেন্ড বেশি ছিলো,তারা চা বেশি পছন্দ করতো।কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বর্তমানে লোকেরা কফিকে বেশি পছন্দ করা শুরু করেছে।কফি পান করা বর্তমানে একটি সাধারণ ব্যপার হয়ে দাড়িয়েছে। তো কথা আর না বারিয়ে, কিভাবে কফি খেয়ে ওজন কমাবেন তা নিয়ে আলোচনা করি।

কফির উপকারিতা

কফিতে সাধারণত  রয়েছে ক্যাফেইন, আর এই ক্যাফেইনকে সেবন করলে আমাদের স্ট্রেস অনেকটা কমে যায়।যরা প্রতিদিন কফি পান করে,তাদের টাইপ২ ডায়াবেটিস হওয়ার চান্স ২৫%কমে যায়।যরা দিনে ২ থেকে ৩ বার কফি পান করে, তাদের লিভার ক্যান্সার অনেক কমে যায়। আর যেসকল লোকেরা ওজন নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য কফি অনেক কার্যকরি। কফি মানুষের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।

যেসকল লোকেরা দিনে ১-২ বার কফি পান করে, তাদের হার্ট ডিজিজ  হওয়ার সম্ভবনা ৫০% কমে যায়। কফি আমাদের এজিন প্রোসেসকে কমিয়ে দায়।কফিতে থাকা ক্যাফেইন ব্রইন শক্তি বাড়াতে সাহয্য করে।কফি ডিপ্রশনকেও ২০% কমিয়ে দায়। কফিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের স্কিন সুন্দর করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে কফির ব্যবহার।

ওজন কমানোর জন্য কফি সহায়ক তবে এটি স্বাস্খ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের সাথে পান করতে হবে।কফির কিছু বৈশিষ্ট্য শরীরের বিপাক ক্রিয়া বাড়ীয়ে শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে।কফিতে কিছু উপাদান রয়েছে,যেমন ক্যাফেইন।ক্যাফেইন  শরীরের ফ্যাট বানিং প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে,যা আপনার ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে চিনি,ক্রিম এবং দুধ যুক্ত কফি পান না করা।

যদি আপনি ওজন কমাতে চান, তাহলে চিনি,ক্রিম ও দুধ মুক্ত কফি আপনাকে পান করতে হবে।চিনি, দুধ,ক্রিমে প্রচুর পরিমানে ক্যালোরি থাকে।তাই আপনাকে ওজন কমাতে ক্যালোরি মুক্ত কফি পান করতে হবে। কালো কফি (ব্লাক কফি) পান করতে হবে,যা একেবারে ক্যালোরি মুক্ত।

গবেষণায় দেখা যায় যে প্রতি ২০০গ্রাম দুধ কফিতে, ক্যালোরি থাকে ১৯৬ কার্ব থাকে ২৫গ্রাম,সুগার থাকে ১৫গ্রাম,ফ্যাট থাকে ৮গ্রাম এবং ক্যাফেইন থাকে ১৫০মিলিগ্রাম।আর প্রতি ২০০ গ্রাম কালো কফি(ব্লাক কফি) তে ক্যালোরি থাকে ০১,কার্ব থাকে ০.৩গ্রাম,সুগার থাকে ০গ্রাম,ফ্যাট থাকে ০গ্রাম এবং ক্যাফেইন থাকে ১৫০মিলিগ্রাম।তাই আপনি যদি ওজন কমাতে চান, তাহলে আপনাকে চিনি,দুধ,ক্রিম মুক্ত কফি পান করতে হবে। 

ওজন কমাতে কফির সাথে লেবু খাওয়ার উপায়

ওজন দ্রুত কমাতে কফির সাথে লেবু মিশিয়ে  পান করতে পারেন।কফিতে থাকা ক্যাফেইন মেটাবলিজম বাড়য় এবং সময়িকভাবে ক্ষুধা কমিয়ে দায়, যা আপনার ওজন কমানোর প্রচেষ্টায় সাহায্য করে।আর অন্যদিকে লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্যাট বার্ন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।লেবুতে ক্যালোরির পরিমান কম।

কফি ও লেবু খাওয়ার নিয়ম হলো, এক কাপ ব্লাক কফি তৈরি করে, কফিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।এটি সকালে নাস্তার পর পান করতে পারেন বা বিকেলেও পান করতে পারেন।

ওজন কমাতে কি পরিমান কফি পান করতে হবে

প্রতিদিন ২-৩ কাপ কফি পান করবে।তবে আপনি যদি এর বেশি কফি পান করেন তাহলে আপনার ঘুমের সমস্যা হতে পারে এবং ওজন কমাতে সহায়ক হবেনা। দিনে ২-৩ কাপ কালো কফি (ব্লাক কফি) আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে।এতে ক্যালোরির পরিমান কম থাকে,তবে  অতিরিক্ত চিনি বা ক্রিমার যোগ না করলে এটি আপনার জন্য আরও উপকারি,এবং অনেক তারাতারি আপনার ওজন কমবে।

ওজন কমাতে কখন কখন কফি খাওয়া ভালো

কফি পানের সঠিক সময় সম্পর্কে জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ,কারণ এটি আপনার শরীরের উপর প্রভাব ফেলে।বিশেষজ্ঞদের মতে কফি পান করার কিছু আদর্শ সময় আছে।

১.সকালে নাস্তার পর কফি পান করা :

সকালে নাস্তার পর ৯ট থেকে ১১টার মধ্যে কফি পান করা ভালো। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর কর্টিসল হরমোন স্বাভাবিকভাবেই  বৃদ্ধি পায়,যা মানুষের শরীরকে প্রকৃতিকভাবে জাগিয়ে তোলে। তাই খুব সকালে খালি পেটে কফি খাওয়া উচিত নয়। খালি পেটে কফি পান করলে আপনার পেটে আ্যাসিডিটি বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তাই নাস্তার পর ভরা পেটে কফি পান করলে তা আপনার ওজন কমাতে ভালো কাজে আসবে।

২.দুপুরে খাবারের পর কফি পান করা:

দুপুরে খাবার খেয়ে ১টা থেকে ৩টার মধ্যে ভরা পেটে কফি পান করতে হবে।দুপুরে খাবার পর কফি পান করলে যা আপনার উদ্যম এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে, তার সাথে আপনার ওজনও কমাবে। 

৩.দুপুরের পর বিকেলে কফি পান করা:

দুপুরের পর বিকাল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে কফি পান করতে হবে।কারন বিকেলের দিকে শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা আবার কমে যায়। তাই বিকেলে কফি পান করতে হবে, এতে করে আপনার শরীর সতেজ থাকবে এবং ওজন কমবে।তবে সন্ধার পর কফি পান থেকে বিরত থাকবেন, কারণ  এটি ঘুমে ব্যঘাত ঘটাতে পারে।

ওজন কমাতে সুষম ডায়েটের সাথে কফি পান

ওজন কমাতে শুধু কফি পান একমাত্র উপায় নয়। সুষম ডায়েটের পাশাপাশি কফি পান করলে আপনার ওজন অতি তারাতাড়ি  কমবে।

আমাদের শেষ কথা বা (উপসংহার) 

ওজন কমাতে কফি একটি কার্যকর উপায়, যদি তা সঠিকভাবে যদি আপনি পান করেন। যেমন চিনি বা ক্রীমবিহীন কালো কফি, ব্যায়ামের আগে কফি পান, এবং ক্ষুধা কমানোর জন্য কফি পান করলে তা দ্রুত আপনার ওজন কমাবে।তবে মনে রাখবেন অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং নিয়মিত ব্যায়ামের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে,তাহলে এর ফল বুঝতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Morning Li8 এ আপনার মূল্যবান কমেন্ট করুন। ইনশাআল্লাহ আমরা প্রত্যেকটি কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।

comment url